বানর করবে চাষার কাজ





মরা প্রতিনিয়ত নানা স্কুল দেখেছি। যেখানে ছেলে মেয়েদের শিক্ষার ব্যবস্থা আছে। শহর-গ্রাম সব জায়গাতেই  স্কুলগুলোতে হাজার হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে।  বিদ্যা মানুষকে মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে শিক্ষা দেয়। শিক্ষা ছাড়া আমরা অচল। শিক্ষা আমাদের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। শিক্ষা বিহীন সমাজের কোন মূল্য নেই তাই আমরা নিজেদের শিক্ষিত করতে ছুটে যাই স্কুল-কলেজে। স্কুল-কলেজ আমাদের শিক্ষার পাশাপাশি  মানসিক বিকাশ গঠনে সাহায্য করে থাকে। স্কুল-কলেজ একটি সমাজের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়।  তবে এমন এক স্কুল আছে যেখানে মানুষকে নয় বানরকে শিক্ষা দেয়া হয়। জ্বী, এটি এমনই একটি স্কুল যেখানে মানুষদের নয়, শিক্ষা দেয়া হয় বানরদের স্কুল। এখানে তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে। এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে চাষের কাজে সহযোগিতা করার জন্যে।

 গত ৪০ বছর যাবৎ গ্রান্ডফাদার ওয়ান নামক একজন ব্যক্তি মালয়েশিয়ার এক ছোট্ট গ্রামে বসে এই কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন।  কৃষকদের সাহায্য করার লক্ষ্যে  ফসল ও ফল উৎপাদনে বানরদের পারদর্শী করে তুলছেন । তিনি বানরগুলোর জন্য অনেক পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। দিন রাত অক্লান্ত পরিশ্রমের বিনিময়ে বানর গুলোকে যোগ্য হিসেবে গড়ে তুলছেন তিনি। সেই কাজে সফলও হচ্ছেন তিনি।  ফসলের ফলনে বানরগুলো মানুষকে  সাহায্য করছে। ফলে চাষীর কাজ আরো দ্রুত করা সম্ভব হচ্ছে। সময় ও শ্রমও কম খরচ হচ্ছে। বানরেরা সাথে সাথে সহযোগিতা করায় তারা তাদের কাজের জন্য আরো দ্রুতগামী হতে পারছে। সময় ও শ্রম একত্র করে বানর ও কৃষকরা অনেক দূর এগিয়ে যাচ্ছে। কৃষকদের সহযোগিতা করার লক্ষ্যে গ্রান্ডফাদার ওয়ান এই মহান উদ্যোগ নেন। তার উদ্যোগে উপকৃত হচ্ছেন কৃষকরা। একা কাজ করার মাঝে কৃষকদের অনেক ভুগান্তি হত কৃষকদের।
চাষা কাজ করার ক্ষেত্রে প্রশিক্ষিত প্রাপ্ত বান্দর গুলো অনেকটা এগিয়ে।
মালয়েশিয়াতে প্রচুর ছোট ছোট লেজোয়ালা বিশেষ প্রজাতির বানরকে গ্রান্ডফাদার ওয়ানের কাছে পাঠায় তাদের  মালিকেরা। ওয়ান তাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে কর্মের জন্য প্রস্তুত করেন।  চাষের কাজের জন্য তাদের দক্ষ করে তোলেন তিনি। শুধু চাষের কাজ নয়, নারকেল গাছ থেকে ডাব পেড়ে আনার কাজটাও শিখানো হয় এদের। এদের সাহায্যের জন্য কৃষকের অনেক উন্নতি হচ্ছে। এবং তারা তাদের কাজে কর্মে খুব সহজে এবং দ্রুত গতিতে এগিয়ে যেতে সক্ষম হচ্ছে।

কিন্তু বানরদের প্রশিক্ষণ করার পদক্ষেপটি খুব একটা সহজ ছিল না। বানরদের প্রশিক্ষণ দেয়ার বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে দিয়েছিল  অ্যানিমাল রাইটস গ্রুপ।  কিন্তু শেষে অভিযোগ কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয় ওয়ান। এখানে  বানরদের প্রতি কোনো রকমের  অত্যাচার চালানো হয় না বলে দাবি করেন ওয়ান। অতপর সমস্ত আন্দোলনকারীরা তার সেই দাবি মেনে নেন।

বানরগুলো তার কাছে তার  সন্তানের মতো এমনটি বলে দাবি করেন ওয়ান। তিনি বানরগুলোকে স্নেহের সাথে প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছেন। তিনি এদের প্রতি অনেকটা ভালোবাসার আচরণ করে থাকেন। বানর গুলো একদিকে যেভাবে কাজে দক্ষ হচ্ছে অন্যদিকে তাদের বুদ্ধিও প্রখর হচ্ছে। বুদ্ধি ও কাজ দুটি দিয়ে তারা সাধারণ মানুষের কর্মের চেয়ে এগিয়ে।৬৩ বছরের বৃদ্ধ  লোকটি সবাইকে দেখিয়ে দিলেন বানরদেরও প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে প্রচুর নারকেল গাছ আছে  বানরগুলো সেই গাছ বেয়ে ওপরে ওঠে নারিকেল ফেলার চেষ্টা করে। এভাবে তারা কিভাবে গাছ থেকে নারিকেল নিচে ফেলতে হয় তা শিখে। নারকেল ফেললে প্রশংসাও পেয়ে থাকে তারা।   তাদের পিঠ চাপড়ে দিয়ে উৎসাহ দিয়ে  থাকেন ওয়ান। এভাবেই প্রশিক্ষণরত বানররা বেড়ে উঠছে। দিন দিন তারা অনেকটা দক্ষ হয়ে উঠছে। এভাবে তারা একদিন এগিয়ে যেতে থাকবে। দক্ষতা দিয়ে হয়তো একদিন মানুষকে পিছে ফেলে দিবে। তাদেরকে প্রশিক্ষণ দিয়ে কাজের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে।

কোন কাজের জন্য এভাবে কোন প্রাণীকে প্রশিক্ষণ দেয়া বা কাজ করানো এটা প্রথম নয়। পৃথিবীর অনেক জায়গাতে এই রকম অদ্ভুত খবর শুনতে পাওয়া যায়। অনেক ক্ষেত্রে প্রাণীরা মানুষের চেয়ে বেশি বিশ্বাস যোগ্য হয়ে থাকে। কোন কোন ক্ষেত্রে মানুষ বিহীন প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত প্রাণী দিয়েই কাজ করার হয়ে থাকে।


সোর্স:ডেইলি বাংলাদেশ

Comments

Popular posts from this blog

Computer

লন টেনিস

মহাস্থানগড়